
আনোয়ার হোসেন :: যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল সদর হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের( দুদক )অভিযানে বেরিয়ে এলো নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র।
গতকাল রোববার ( ১৪ সেপ্টেম্ব )দুপুরের সময়ে এই অভিযানে সদর হাসপাতালের রান্নাঘরে পচা পেঁয়াজ,নিম্নমানের ভোজ্য তেল ও খাবারে অনুপযোগী লবণ ব্যবহার করতে দেখা যায়। এছাড়াও রোগীদের খাবারের পরিমাণে গরমিল সহ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে বহিরাগতদের অবৈধভাবে টাকা আদায় ঘটনার প্রমান মিলেছে। দুদকের যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমীনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের আরএমও ডাঃ হাবিবা সিদ্দীকা ফোয়ারা এবং দুদকের উপ সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম চিরঞ্জিব নিয়োগী।
রান্নাঘরে অভিযান চালিয়ে দেখতে পান, চিকন চালের ২০০ গ্রাম ভাতের পরিবর্তে নিম্ন মানের মোটা চালের ১৫০ গ্রাম ভাত দেওয়া হচ্ছে। ১০০ গ্রাম পাউরুটির পরিবর্তে ৮০ গ্রাম দেওয়া হচ্ছে। ১২ টাকা দামের বড় ডিমের বদলে ছোট ডিম দেওয়া হচ্ছে। খাবারের উপযোগী নয় এমন ছোট ছাইজের কলা এবং নিম্নমানের ডাল ও লবণ ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬০ পিস স্যালাইন মজুদ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাহিরের দোকান থেকে স্যালাইন কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই বিষয়ে ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স কে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ )দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদক টিম হাসপাতালের প্লাস্টার রুমেও অভিযান চালায়। সেখানে তারা সবুজ ও মোসাব্বির নামের দুই জন বহিরাগত যুবক কে কাজ করতে দেখেন। হাসপাতালের কোনো কর্মী না হওয়া সত্ত্বেও তারা রোগীদের কাছ থেকে প্লাস্টার বাবদ অবৈধভাবে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করেছে। তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
অভিযান শেষে দুদকের টিম হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ হুসাইন শাফায়াতের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত অনিয়মের বিষয়ে অবহিত করে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানায়।
তত্ত্বাবধায়ক জানান,রোগী প্রতি খাবার বাবদ ১৭৫ টাকা বরাদ্দ থাকলেও উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় পুরোনো টেন্ডার অনুযায়ী ১২৫ টাকার খাবার সরবরাহ করতে হচ্ছে, যার কারণে খাবারের পরিমাণ ও মান কম দেওয়া হচ্ছে।
দুদক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান,রোগীদের চিকিৎসা,খাবার এবং পরিবেশ সব কিছুতেই অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম বিরাজ করছে। রোগীদের উন্নত চিকিৎসা এবং খাবার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।