
আনোয়ার হোসেন :: যশোর পৌরপার্ক থেকে তুলে নিয়ে দুই যুবককে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে যশোর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ও টিএসআই রফিকুল ইসলাম সহ ১০ জনএর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
গত রোববার ( ২৪শে আগস্ট ) দুপুরের সময় সদর উপজেলার তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন বাদী হয়ে এই মামলাকরেন। তিনি ‘গুম হওয়া’ যুবক সাইদুর রহমানের বাবা।
বিচারক সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন,যশোর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমারখালী গ্রামের মৃতঃ শ্যাম হাওলাদারের ছেলে ফুলু মিয়া,মৃতঃ হাকিম শেখের দুই ছেলে রমিজ ও নাসির, মৃতঃ আব্দুল হাই শেখের ছেলে সাইফুল ইসলাম, মৃতঃ আব্দুল জব্বার শেখের ছেলে হারুন অর রসিদ,মৃতঃ সেলিম শেখের ছেলে জাহিদুল ইসলাম এবং জাহাঙ্গীর তালুকদারের ছেলে আল আমিন।
মামলায় বাদী জানান,গত ৫ই এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে বন্ধু শাওন কে সাথে নিয়ে যশোর পৌরসভা পার্কে ঘুরতে যায় সাইদ। ওয় সময়ে তৎকালীন যশোরের এসপি আনিসুর রহমান এর নির্দেশে টি.এস.আই রফিক সহ অন্য সকলে পৌরপার্ক থেকে সাইদ ও শাওন কে তুলে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পরে যশোর কোতোয়ালি থানায় গেলে তৎকালীন ওসি বলেন টিএসআই রফিক ওই দুইজন কে এখনও থানায় সোপর্দ না করে সদর ফাঁড়িতে নিয়ে গেছে। এরপরে সদর ফাঁড়িতে এসপির নির্দেশে টি.এস.আই রফিক ও কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা সাইদ ও শাওন কে আদালতে সোপর্দের কথা বলে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিলো। কিন্তু আদালতে সোপর্দ না করায় বাদীর স্ত্রী তৎকালীন এস.পি আনিসুর রহমানের কাছে যায়।
এস.পি এ সময় ওই দুইজন কে সামনে পেলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। একই সাথে সাইদের মাকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। পরে সাইদের মা বাদী হয়ে টি.এস.আই রফিক, গোলাম মোস্তফা এবং আল-আমিনের নামে আদালতে মামলা করেছিলেন। ওই সময়ে সাইদের মাকে শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে আটকে রেখে মারপিট করে।
এরপর এস.পি আনিস তার অফিসে ডেকে নিয়ে সাইদের মাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেন। আহত অবস্থায় কিছুদিন পরে সাইদের মা মারা যায়। কিন্তু আজ অবধি সাইদ ও তার বন্ধু শাওনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন মামলায় বলেছেন, তার ছেলে সাইদুর রহমান ওরফে সাইদ লেখাপড়া করতো। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিল। সেই কারণে তার প্রতি তৎকালীন সরকারের দমন-নিপীড়ন আচরণ ছিল।
অন্য আসামিরা পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং পদস্থ ছিল। ৪ থেকে ১০ নম্বর আসামিরা তার (বাদীর) পিরোজপুরের কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি জবর দখল করে নেয়। লোক মারফত বিষয় টি জানতে পেয়ে তার ছেলে সাইদ কে বিগত ২০১৭ সালের ১ লা এপ্রিল পিরোজপুর গ্রামের বাড়িতে পাঠায়।
সেখানে গিয়ে তারা সম্পত্তি জবরদখলের ব্যাপারে আসামিদের সঙ্গে কথা বলে। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলেকে জীবন শেষ করার হুমকি দেয়।বিষয়টি যশোরে সাইদ তার মাকে জানায়। মামলার অভিযোগ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্ঠা চালালেও সাক্ষাৎ না মেলায় তাদের বক্তব্য জানা যাইনী।