
স্টাফ রিপোর্টার :: চাঞ্চল্যকর বেনাপোল স্থলবন্দরের বীপরীতে ভারতের পেট্টাপোল বন্দরে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃক ১৫ ট্রাক ভারতীয় নানা ধরনের শুল্ক ফাঁকির পণ্য চালান আটকের ঘটনায় গোমর ফাঁস হয়েছে আওয়ামীনেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার হাদীউজ্জামানের কুকীর্তি।
সাথে সাথে উন্মোচন হয়েছে এক যুগের ও বেশী সময় ধরে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জিরো থেকে হিরো বনে যাওয়া হাদীউজ্জামানের হাতে গড়া কথিত ভাই ভাই সিন্ডিকেটের গল্প কথা।
এ নিয়ে একাধিক প্রিন্ট পত্রিকা,অনলাইন পোর্টালেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সবশেষ মঙ্গলবার ( ২৩ সেপ্টেম্বর ) দৈনিক প্রজন্ম একাত্তর পত্রিকায় “ বেনাপোলে হাত বদলে চলছে আলোচিত ভাই ভাই সিন্ডিকেট” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনে হাদীউজ্জামান ও তার আপনদুই সহদর তৌহিদ এবং হাসানুজ্জামানকে নিয়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউরসহ কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজজে সিন্ডিকেট গড়ে তাদের শুল্ক ফাঁকি কাজের কর্মকান্ড ও অবৈধ্য ভাবে অর্জিত অর্থ সম্পদের বিবরন তুলে ধরা হয়েছে।
আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামানের ব্যাপারে এলাকায় ব্যাপক খোঁজ খবর ও অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায় কর্মজীবনে শিক্ষকতা পেশা দিয়ে শুরু করলেও বর্তমান কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগের রাজনিতীই তার মুল পেশা হয়ে দাড়ায়। বিগত ওয়ান ইলেভেনের পরই আলাদিনের চেরাগের মতই হঠাৎ করেই খুলতে থাকে তার কপাল।
প্রথমে আমদানি কারক লাইসেন্স ও পরে রিমু এন্টার প্রাইজ নামের একটি সি এন্ড এফ এজেন্ট লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ছোট বড় আমদানি কারকের ভারত হতে আমদানি করা পণ্য ক্যারিং কন্টাকে নিয়ে ও সে অর্থ কৌশলে সরকারকে ফাঁকি দেওয়াসহ হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে বেনাপোলে আমদানি কারকদের ছত্রপতি হয়ে গেড়ে বসে।
যুবলীগ দিয়ে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও অবৈধ্য আয়ের কালো টাকায় ২০১৩ সালের পর হতে শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মৃত নুরুজ্জামানের সাথে সখ্যতা গড়ে হাদীউজ্জামান পুটখালী ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সংগঠনের হাল ধরেন।
সুযোগ সন্ধানী এ নেতা কালো টাকার প্রভাবে এলাকার প্রবীন ও আওয়ামীলীগের ত্যাগি নেতাদের টপকিয়ে পদ বাগানোসহ নুরুজ্জামানের তদবিরে ২০১৬ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করে পুটখালী ইউনিয়নের আওয়ামীলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এলাকার সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর প্রধান সবুর,পুটখালীর সিরাজ এবং স্বর্ণ ও গরু ব্যবসায়ীর গড ফাদার নাসিরের সাথে সখ্যতা গড়ে পুটখালী ঘাটসহ এলাকার বাওড় এর নিয়ন্ত্রণ নেয়। দৌলৎপুরের সুপরিচিত মৃত শহীদুল্লাহ মাস্টারের ছেলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ নেতা ও সিএন্ড এফ এজেন্ট ব্যবসায়ী রহমতকে পার্টনার বানিয়ে তেরঘর ঘাটসহ পুটখালী এলাকার সীমান্ত ঘাট গুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত হতে আসা গরু,মাদক,অস্ত্র ও চোরাচালানী পণ্যে প্রবেশের জন্য নিয়মিত উত্তোলন করা টাকার ভাগ নেন।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সীমান্তে স্বর্ণ চোরাচালানীদের কাছ হতে নিয়মিত টাকা ও বিলাসবহুল গাড়ী নিতো চেয়ারম্যান হাদী যা দিয়ে তিনি আয়েশী জীবন যাপন করতো বলে জানা গেছে।
অবৈধ্য আয়ের একটা বড় অংশ হাদী আওয়ামী সংগঠন,প্রশাসন ও ক্যাডার বাহিনীর পিছনে খরচ করায় এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতনা। বর্তমানে তিনি বেনাপোল পৌরসভার বি এনপি কর্মী আলিমুর হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি হয়ে পলাতক রয়েছে।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য যাচায়ে আওয়ামীলীগ নেতা হাদিউজ্জামানের সহিত যোগা যোগের চেষ্ঠা চালালেও সাক্ষাৎ না মেলায় তার বক্তব্য জানা যাইনী।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বললে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।এলাকাবাসী জানাই হাদীউজ্জামানের ছোট ভাই তৌহিদ কিছু দিন পূর্বে ব্যবসায়িক সংক্রান্তে সৃষ্ট ঝামেলায় প্রকাশ্য দিবালকে সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে হাদীউজ্জামান আত্নগোপনে চলে গেলেও তার ভাইদের দ্বারা এলাকায় ব্যাবসা বানিজ্য পরিচালনা করছে।
বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে ভারত হতে বেনাপোল বন্দরে আগত মিথ্যা ঘোষণা অথবা ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য চালান আটকের ঘটনায় কথিত ভাই ভাই সিন্ডিকেট জড়িত থাকলেও বা নাম ওঠে আসলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এই অপরাধ চক্রের রহস্য উদঘাটনে কোন উদ্যেগী হয়নি। যার ফলে হাদিউজ্জামানের মত রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকেই স্টেশনটিতে শুল্ক ফাঁকির কল কাঠি নাড়ছে।এ বিষয়ে জানতে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের ব্যবহৃত ফোনে কল দিলেও রিসিভি না করায় বক্তব্য জানা যাইনী।
বেনাপোল বন্দরে শুল্ক ফাঁকির হিড়িকে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব বঞ্চিত হলেও রাতা রাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনছেন আওয়ামী নেতা হাদী ও রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউরের মত অসাধু কর্মকর্তারা। তাদের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ্য অর্থ সম্পদের প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে দুদুকসহ সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ।