শনিবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পুটখালির যুবদল নেতা খালেক হত্যাকান্ডে আলোচিত রেজা ও জিয়ার নামে মামলা

বেনাপোল প্রতিনিধি :: শার্শার পুটখালী সীমান্তের অপরাধ জগতের বহুল আলোচিত দুই সহোদর রেজাউল ইসলাম রেজা (৫১) ও জিয়াউর রহমান ( ৪৭ ) এর নামে পুটখালী ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।

হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ১৩ বছর পর মরহুম আব্দুল খালেকের ছেলে মোঃ আহসান হাবীব (৩৭) বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামী করে গতকাল বৃহষ্পতিবার ( ২৫ সেপ্টেম্বর ) বিজ্ঞ সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞ আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমিন বাদীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ কর্তৃক দায়ের করা মামলার নথি ও সিডি তলব করে আগামী ২০ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবাশীষ দাস।

মামলায় তৎকালীন ওসিসহ আরো বেনাপোল পোর্টথানার সাবেক তিন দারোগাকে আসামী করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে একটি দায়সারা মামলা করেছিলো বলে জানা গেছে।এছাড়ও আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে ব্যার্থ হওয়ার কথা আর্জিতে উল্লেখ রয়েছে।

বাদীর দাবি স্থানীয় আসামিরা সকলেই আওয়ামীলীগের রাজনিতীর সাথে জড়িত। আসামী পক্ষের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারী দুপুরে শাহাজালাল ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলে হত্যার স্বীকার খালেক তেল কিনতে গেলে আসামীরা প্রথমে তাকে বোমা হামলা করে ও পরে তাকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান।

এ ঘটনার পর তৎকালীন বেনাপোল পোর্টথানার এস আই আবুল কালাম আজাদ হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের রক্ষা করতে ২০১২ সালের ৭ জানুয়ারী নিজে বাদী হয়ে মনগড়া অভিযোগে মামলা করেন।

মামলা বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। এরকম কাজে আমি কোন ভাবেই জড়িত নই।

হত্যাকান্ডে স্বীকার খালেক পরিবারকে আসামী পক্ষরা বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন সময়ে এলাকা ছাড়া করেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার নিশ্চিত করেন। হত্যাকান্ডে দীর্ঘ ১৩ বৎসর পর পিতার হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে আদালতে মামলা দায়ের ঘটনা জানা জানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একে একে বেরিয়ে পড়ছে পুটখালী সীমান্তের গরু ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী খ্যাত আপন সহদর রেজা ও জিয়ার কুকীর্তি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগের শার্শা উপজেলার প্রভাবশালী নেতার ছত্র ছায়ায় ও পুটখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামানের সহযোগীতায় পুটখালী ঘাট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রেজা ও জিয়া স্বর্ণ ভারতে পাচার করতো। বিনিময়ে ভারত হতে গরু ও ফেন্সিডিল এনে তা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পৌছে দিতো।

এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী গড়ে তুলে রেজা বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের মারধরসহ চাঁদা আদায় করতো। জিয়া তার ভাইয়ের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে হুন্ডি ব্যবসা ও ভারতে নিয়মিত স্বর্ণপাচার করতো। কয়েক বছরের ব্যবধানে রেজা ও জিয়া পুটখালী,বেনাপোল,যশোর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে সম্পতি ক্রয় করে বহুতল ভবন নিমার্ণসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।

তাদের জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ অর্থ সম্পদের প্রকৃত তথ্য দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠ তদন্তে বেরিয়ে পড়বে সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন।এদিকে যুবদল নেতা খালেক হত্যার সঠিক বিচার চেয়ে হত্যাকান্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেছেন পুটখালী গ্রামবাসী।

সম্পর্কিত