বৃহস্পতিবার, ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

কুড়িগ্রামে দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“দুর্নীতি বিরোধী শপথের প্রদীপ্ত স্বাক্ষরে নতুন সূর্যশিখা জ্বলবেই”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হলো উপজেলা পর্যায়ের মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা স্তরের দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।

সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ আয়োজন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কুড়িগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় এবং উলিপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উলিপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোঃ ফিরোজ আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ, উলিপুর সরকারি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আশরাফুজ্জামান, যিনি বলেন— “দুর্নীতি একটি জাতির অগ্রগতির পথে বড় অন্তরায়। এটি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে। তাই দুর্নীতি রোধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

প্রতিযোগিতায় উপজেলার ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে এন. এস. আমিন রেসিডেন্সিয়াল স্কুল ও উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মুখোমুখি হয়। বিতর্কে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা’ বিষয়ে তর্ক উপস্থাপন করেন দুই দলের সদস্যরা। বিপক্ষ দল এন. এস. আমিন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের হুরে জান্নাত হিমু, সাবরিনা আমিন শৈলী এবং তানজিয়া সরদার বিজয়ী হয়। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পক্ষ দল উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফারদিল জামান, পরশ কুমার দেব অপন এবং আহনাফ রহমান।

বিজয়ী ও দ্বিতীয় স্থান দলের শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা বলেন, “দুর্নীতি শুধু সরকারি কর্মকর্তারাই করেন না, এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। যেমন রিকশা ভাড়া ২০ টাকা হলেও ৫০ টাকা নেওয়া, পরীক্ষায় নকল করা, এমনকি বাড়িতে পড়ার কথা বলে অন্য কাজে সময় ব্যয় করাও একধরনের অনৈতিকতা। আমাদের জীবনের ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়েই দুর্নীতি শুরু হয়। তাই আমাদের নিজেদের আচরণ সংশোধন করতে হবে। শিক্ষার্থীরাই আগামী প্রজন্মের চালিকাশক্তি—তাদের থেকেই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের সূচনা হবে।”

এই প্রতিযোগিতা শুধু একটি বিতর্ক নয়, বরং দুর্নীতি বিরোধী চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি সফল প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত