
বিমল কুমার রায়, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মোকলেছার হত্যাকান্ডের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে নারীসহ ৫ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন— ধনমন্ডল এলাকার ইলিয়াস হোসেন, আসাদুজ্জামান, বাবুল মিয়া এবং নিহতের চাচাতো বোন মোর্শেদা ইয়াসমিন শিল্পী ও তার স্বামী মজিবর শিকদার। মজিবর শিকদার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার আলিশা গ্রামের বাসিন্দা।
গত ১২ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোকলেছার রহমান (৩৫) নামে এক কসমেটিকস ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ নিজ বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে একটি বাঁশঝাড়ে দেখতে পান নিহতের চাচী মোকসেদা বেগম।
খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। পরে র্যাব, সিআইডি, পিবিআইসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলামত সংগ্রহ করে। বিকাল ৪টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত মোকলেছার রহমান দণ্ডপাল ইউনিয়নের ধনমন্ডল ঢাকাইয়া পাড়া এলাকার শাহাবুদ্দিনের একমাত্র সন্তান। তিনি পাশ্ববর্তী খোচাবাড়ি বাজারে কসমেটিক এর দোকান করতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত না হওয়ায় শুক্রবার তা সম্পন্ন করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার রাতে দেবীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনের বক্তব্যে হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার সূত্র পাওয়া যায়।
নিহতের বাবা শাহাবুদ্দিন বলেন, “বুধবার রাত ৯টার দিকে দোকানে আমার নাতীকে রেখে বাড়ির পাশের একটি বিয়েতে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে আসার কিছুক্ষন পর আবার বের হয়। এরপর সে দোকানেও ফেরত যায় নি এবং বাড়িতেও ফেরত আসে নি। ফজরের নামাজের সময় পুত্রবধূ জানায়, সে এখনো ফেরেনি এবং তার ফোনও বন্ধ।” এরপর সকাল ১০ টায় বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে তার রক্তমাখা গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তিনি ধারণা করছেন, হত্যার সঙ্গে তার ছেলের ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত থাকতে পারে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোয়েল রানা বলেন, “ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আমরা কাজ করছি। সন্দেহভাজন পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”