মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আত্রাইয়ে ৩৬ মণের ষাঁড়, দাম না পাওয়ায় চিন্তায় খামারি

মো:মেহেদী হাসান,স্টাফ রিপোটার :

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের তিলাবুদুরী মল্লিকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম মল্লিক (ওরফে জাহিদুল) নিজ খামারে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর ধরে লালনপালন করে তৈরি করেছেন এক বিশাল আকৃতির ষাঁড়। ওজন প্রায় ৩৬ মণ। কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত থাকলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় শঙ্কায় পড়েছেন তিনি।

 

জাহাঙ্গীর জানান, সৌদি আরব থেকে দালালের প্রতারণায় নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরার পর কৃষিকাজের পাশাপাশি গরুর খামার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। শুরুতে ব্যাংক ঋণ ও জমি বিক্রি করে খামার শুরু করেন। এক সময় ১২টি গরু থাকলেও গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকসান গুনে গরুর সংখ্যা কমিয়ে আনেন।

এই ষাঁড়টির জন্ম হয় বাড়ির একটি দেশি গাভীকে ফ্রিজিয়ান জাতের বীজ দিয়ে প্রজননের মাধ্যমে। শুরুর দিকেই পশু চিকিৎসকের পরামর্শে আলাদা যত্নে লালনপালন শুরু করেন তিনি। স্ত্রী-সন্তানদের সহায়তায় প্রাকৃতিক উপায়ে—পাকা কলা, গম-ভুট্টার ভুসি, ঘাস ও খড় খাইয়ে বড় করা হয় ষাঁড়টিকে।

জাহাঙ্গীরের ভাষায়, “এটা শুধু একটি পশু না, আমাদের পরিবারের শ্রম-ভালবাসা মিশে থাকা একটি স্বপ্ন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এটিকে বড় করেছি। দাম পাওয়ার আশায় আছি, তবে ক্রেতারা এখন পর্যন্ত ৭–৮ লাখ টাকার বেশি বলছেন না, অথচ ব্যয় হয়েছে তার চেয়েও বেশি। ১৪ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া উচিত বলে মনে করি।”

এদিকে ষাঁড়টির কথা ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রামের মানুষও একনজর দেখতে ছুটে আসছেন জাহাঙ্গীরের বাড়িতে।

আত্রাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু আনাছ জানান, “এ বছর উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ২৭ হাজার ৮৮৫টি, প্রস্তুত হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৬৭টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু হলো জাহাঙ্গীর মল্লিকের ষাঁড়টি। এতো বড় গরু উপজেলা পর্যায়ে বিক্রি কঠিন, তবে আমরা তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করছি।”

বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে হাট না বসায় বা বড় ক্রেতার অভাবে বিপাকে পড়েছেন জাহাঙ্গীর। ষাঁড় বিক্রি না হলে, তার মতো স্বপ্ন দেখা আরও খামারিদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত