নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফড়া মৌজায়, দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা একটি সরকারি রাস্তা, উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের অনুসন্ধান ও সংবাদ প্রকাশের পরপরই প্রশাসন বিষয়টি আমলে নেয় এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে বলা হয়, ছাইতনের তল থেকে শান্তিপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রেকর্ডভুক্ত একটি সরকারি কাঁচা রাস্তা, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন।
রবিবার ( ১৫ জুন ২০২৫) বিকাল ৩ টায় সাংবাদিক টিম সরেজমিনে গিয়ে দেখেন রেকর্ড মূলে প্রায় ৬৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি প্রস্থ ১৪ ফুট চওড়া হলেও রাস্তা জুড়ে সুপারির বাগান, পুকুর, খড়ের গাদা, ঘর উঠিয়ে পুরো রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় রাস্তাটির অস্তিত্ব নেই বললেই চলে।
সংবাদ প্রকাশ করার একদিন পরেই, মঙ্গলবার (১৭ জুন ২০২৫) দুপুর ২ টার পর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহার নির্দেশে থেতরাই, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শাহ্আলম খন্দকার, তাঁর স্টাফসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাস্তার অবস্থা পরিদর্শন করেন ।
প্রায় ৬৮০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৪ ফুট প্রস্থের এই রাস্তাটি সুপারির বাগান, পুকুর, খড়ের গাদা এবং বিভিন্ন ঘরবাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে শতাধিক পরিবারের চলাচলে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
এ অবস্থায় এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত করলে মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকা ও জাগরণী টিভি-র কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি, উত্তরবঙ্গের সংবাদ (অনলাইন)পত্রিকার সম্পাদক ও দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করে, বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের ওই প্রতিবেদনে দখলের ভয়াবহ চিত্র ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্য উঠে আসে।
সংবাদ প্রকাশের একদিন পরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহার নির্দেশে থেতরাই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শাহ্আলম খন্দকার, তাঁর স্টাফসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাস্তার অবস্থা পরিদর্শন করেন। তিনি সরেজমিনে রেকর্ড অনুযায়ী প্রায় ৬৮০ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট প্রস্থের সরকারি রাস্তার অস্তিত্ব নিশ্চিত করেন।
ভূমি কর্মকর্তা শাহ্আ
লম খন্দকার জানান, "তদন্তে আমি রেকর্ডভুক্ত রাস্তার সত্যতা পেয়েছি। যাঁরা রাস্তাটি দখল করে রেখেছেন, তাঁদের অধিকাংশের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকেই স্বেচ্ছায় রাস্তা ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছেন। শুধু একজন দখলদারের সঙ্গে কথা হয়নি। আমি যতটুকু প্রতিবেদন পেয়েছি, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব। ইনশাআল্লাহ দুই-একদিনের মধ্যেই রাস্তা উদ্ধারের কাজ শুরু হবে। জনগণ তাদের রাস্তা ফিরে পাবে—এটা আমি নিশ্চিত করছি।”
এদিকে, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমরা ভাবতেও পারিনি এত দ্রুত প্রশাসন সাড়া দেবে। এই রাস্তাটি উদ্ধার হলে আমাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট দূর হবে।”
এখন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, রাস্তা উদ্ধারের কাজ দ্রুত শুরু হয়ে নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের সুযোগ তৈরি হবে এবং ভবিষ্যতে এমন দখলের বিরুদ্ধে প্রশাসন আরও কঠোর হবে।