যশোর প্রতিনিধি :: সাম্প্রতি যশোরের হাট বাজার গুলোতে পরিবেশ ধ্বংশকারী নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে। সহজ ও সুলভমূল্য হওয়ায় ক্রেতাকে সন্তুষ্টি করতে পণ্যক্রয়ে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে এই পলিথিন ব্যাগ। যশোর বাজারে পলিথিন প্রাপ্তির নেপথ্যে রয়েছে শহরের গোহাটা রোডের মুদি ব্যবসায়ি অরবিন্দ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিং ও অবৈধ্য মজুদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়ায় পলিথিন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে।
বিগত ২০০০সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন( সংশোধনী )অনুযায়ী ২০০২ সালের ১লা মার্চ থেকে পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির বিধানও রয়েছে। এরপর হতে পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন,আমদানি,বাজাজাতকরণ,বিক্রি,মজুদ এবং বিতরণ নিষিদ্ধ থাকলেও এসব কিছুর তোয়াক্কা না করেই শহরের বেজপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া ও মিথিলা ট্রেডার্স এর মালিক দীর্ঘ বৎসর ধরেই মুদি ব্যবসার আড়ালে নিষিদ্ধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
তার এই অবৈধ্য ব্যবসা পরিচালনা কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা,গনমাধ্যমকর্মী ম্যানেজ করেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অরবিন্দের এক ক্রেতা জানান,ঢাকা হতে বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থায় প্রশাসনের নাক গলিয়ে নিষিদ্ধ পলিথিনের চালান এসে পৌঁছায় যশোর শহরে।সেখান হতে ভ্যান যোগে পলিথিনের বস্তা রাখা হয় অরবিন্দের রাজার হাটা এলাকায় অবস্থিত ভাড়া করা গোপন গোডাউনে।সুযোগ মত চাল,আটা ময়দার বস্তায় ভরে মজুদ করে সিটি প্লাজা রোডের শুরুতে অবস্থিত সাইনবোর্ড বিহীন মুদি দোকানে।
সেখান থেকে খুরচা ব্যবসায়ীর চাহিদা অনুযায়ী চড়া মূল্য নিয়ে যশোরের প্রত্যেকটি উপজেলার হাট বাজারে,কাাঁচা বাজারে এমনকি সুপারশপ গুলোতে সরবারহ করে থাকে পলিথিন সম্রাট খ্যত অরবিন্দ। ২০ বছরের অধিক সময় ধরে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা চালিয়ে অরবিন্দ দেশে ও ভারতে নামে বেনামে বহু সম্পত্তি ক্রয় করেছে বলে তিনি আরো জানান।
নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রয় বিষয়ে জানতে অরবিন্দের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদককে জানান,আগে আমি ব্যবসা করতাম এখন পলিথিনের ব্যবসা করিনা। গত শনিবার কুরিয়ার হতে ১৩ বস্তা পলিথিন ছাড় করেছেন বলে তথ্য আছে এমন প্রশ্নে?কোন উত্তর না দিয়ে সংযোগ কেটে তিনি ফোন বন্ধ করে রাখেন।
নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রয় ও ব্যবহার বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভুমিকা বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে যশোর অফিসের উপপরিচালক মোঃ এমদাদুল হক বলেন,নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রেতা ও মজুদদারদের বিরুদ্ধে যশোর অফিসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গত ৩ জুলাই যশোরের বড় বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪২৩ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধারসহ ১০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গতকাল ২১জুলাই উপজেলার চৌগাছা বাজারের নয়নের মুদি দোকানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে ৩১০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধারসহ ৩০হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
এছাড়া পলিথিন ব্যবসায়ীদের মজুদকৃত গোডাউনের গোপন তথ্য পেলে আমরা সেখানে অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে শাস্তির আওতায় আনবো। পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে অভিযানকালীন সময়ে প্রচরণাও চালানো হচ্ছে।