রাজবাড়ী প্রতিনিধি ঃ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাজমিন খাতুন (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী, শশুর ও শাশুরীর বিরুদ্ধে আত্নহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার (১১ জজুন) রাতে মামলাটি দায়ের করেছেন নিহত তাজমিন খাতুনের বাবা বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের করমচাঁদপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান। মামলার আসামীরা হলো, বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীরামকান্দি গ্রামের কামরুল মোল্যার ছেলে তামিম মোল্যা, খলিল মোল্যার ছেলে কামরুল মোল্যা, কামরুল মোল্যার স্ত্রী কুলসুম সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩জন।

মামলা সুত্রে জানা যায়, আজমিন খাতুন ও তার স্বামী তামীম মোল্লা রাজধরপুর হাই স্কুলে দশম শ্রেণীতে একসঙ্গে লেখাপড়া করে। গত ১ মাস পুর্বে তুলে নিয়ে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে পরিবারের অগোচরে বিয়ে করে। পরবর্তীতে উভয় পরিবার তাদের বিবাহ মেনে নেয়। বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। গত ৮ জুন সকাল ৮টার সময় আজমিনকে মারধর করে। তার বাবা আলিমুজ্জামান তার মেয়েকে রাজবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। দেখতে পান গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ। সংসার টিকানোর জন্য মেয়েকে বুঝিয়ে ওই বাড়ীতে রেখে আসে।

ঈদের দাওয়াত খেতে গত ০৯ জুন সকালে বাবার বাড়ী আজমিনের যাওয়ার কথা থাকলেও এ নিয়ে স্বামী, শশুর ও শাশুরীর সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাকে আত্নহত্যার জন্য বিভিন্ন উস্কানীমূলক কথাবার্তা বলে। পরে দুপুর পৌনে ১ টা দিকে বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর (শ্রীরামকান্দি) গ্রামের আজমিন আক্তার শশুর বাড়ির লোক চক্ষুর অন্তরালে বসতঘরের পশ্চিম পাশের রুমে বৈদ্যুতিক সিলিং ফ্যানের সাথে পরিহিত ওড়না গলায় পেচিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। দ্রুত বটি দিয়ে ওড়না কেটে সিলিং ফ্যান থেকে খাটের উপর নামায়। তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ির আশেপাশের লোকজন এসে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন  দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে লাশ ফেলে রেখে তারা সটকে পড়ে। সদর থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে। গত ১০ জুন ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। পরে বাবার বাড়ীতে নিয়ে দাফন করে।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে নিহত আজমিন খাতুনের বাবা আলিমুজ্জামান বাদী হয়ে স্বামী, শশুর ও শাশুরীর নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩জনের বিরুদ্ধে আত্নহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।