স ম জিয়াউর রহমান :: দিনব্যাপী কর্মসূচী কবর জিয়ারত,আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতমের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের আপোষহীন সৈনিক এস. এম. জামাল উদ্দিনের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত ।
গত ১৮ জুলাই শুক্রবার বীর মুক্তিযোদ্ধা, চট্টলবন্ধু এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস. এম. জামাল উদ্দিনের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতিকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক ও নাগরিক সংগঠন।
দিনব্যাপী এই আয়োজনের নেতৃত্ব দেয় চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম, এস. এম. জামাল উদ্দিন স্মৃতি পরিষদ ও এস. এম. জামাল উদ্দিন ফাউন্ডেশন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছিল কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, কতমে কোরআন এবং স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা। সকাল ১১টায় হাটহাজারীর মাদার্শা গ্রামে এস. এম. জামাল উদ্দিনের কবর জিয়ারত ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন। যিনি নিজে দীর্ঘদিন এস. এম. জামাল উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা কবর জিয়ারত করেন এবং দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা খতমে কোরআন ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কদম মোবারক মসজিদের খতিব সোলায়মান এবং এতিম খানার হাফেজগণ, যিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত ও জান্নাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করেন।
দুপুরে কদম মোবারক এতিমখানায় আয়োজন করা হয় পবিত্র কোরআনখানি ও কতমে কোরআন। সেখানে এতিম শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয় এবং এস. এম. জামাল উদ্দিনের আত্মার শান্তির জন্য মুনাজাত করা হয়।
এরপর বিকেলে চট্টগ্রাম শহরের ঐতিহাসিক চেরাগি পাহাড়স্থ বঙ্গবন্ধু ভবনে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এস. এম. জামাল উদ্দীন স্মৃতি পরিষদের সমন্বয়ক স. ম. জিয়াউর রহমান।
বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের নেতা নুরুল হুদা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজকর্মী ডাঃ আহমেদ সাঈদ, মরহুমের বড় ছেলে এস. এম. ফরহাদ আলী, ছোট ছেলে এস. এম. তৌহিদ আলী, মোহাম্মদ রাকিব, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শমির পাল, মোহাম্মদ রিপন, মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ নুর, মোহাম্মদ সাকিব,মোহাম্মদ সোহেল, মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম দিসানসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, “এস. এম. জামাল উদ্দিন ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ও আপোষহীন নেতা। তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, ছিলেন একজন দিকনির্দেশক, সংগঠক ও প্রকৃত চট্টগ্রামপ্রেমিক। তাঁর দূরদর্শী চিন্তা, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং চট্টগ্রামের স্বার্থে বারবার অবস্থান গ্রহণ তাঁকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করেছে।”
অনুষ্ঠানে এস. এম. জামাল উদ্দিনের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়—বিশেষ করে কর্ণফুলী নদী রক্ষা আন্দোলন, বন্দর উন্নয়ন, রেল ও সড়কসংযোগ, পরিবেশ আন্দোলন, পাহাড় রক্ষা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তাঁর নিরলস উদ্যোগের কথা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করেন বক্তারা।
আলোচনার এক পর্যায়ে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “এস. এম. জামাল উদ্দিন শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন আন্দোলনের প্রতীক। আজকের তরুণ প্রজন্মের উচিত তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের ইতিহাস জানতে ও তা থেকে শিক্ষা নেওয়া।” অনুষ্ঠান শেষে সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে দোয়া করেন—আল্লাহ যেন এস. এম. জামাল উদ্দিনকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন এবং তাঁর আত্মা শান্তিতে রাখেন।
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এস. এম. জামাল উদ্দিনের জীবন ও কর্মকে ধরে রাখতে নিয়মিতভাবে স্মরণসভা, আলোচনা এবং গবেষণা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।